 
    
উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তরকান্দা গ্রামে সোবহান মিয়ার পুকুরে মঙ্গলবার ভোরের সূর্য উঠার আগে থেকে দেখা মিলে পাড়জুড়ে মাছ শিকারিদের তোড়জোড়।বড়শিতে লোভনীয় টোপ ফেলে অপেক্ষা মৎস্য শিকারিদের।সৌখিন ৭ শিকারি মিলে ২১ ছিপে ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে টিকিট কেটে চলেছে এই মাছ ধরার উৎসব।
বৈরি আবহাওয়া কখনো টিপটিপ কখনো আবার মুষলধারে বৃষ্টি তবুও গভীর জলের মাছ ডাঙায় তুলে আনার প্রতীক্ষার প্রহর ও কৌশলের শেষ নেই শিকারীদের।কেউ কেউ কাঙ্ক্ষিত মাছ পেয়ে গেছেন।হাসির ঝিলিক তখন মাছ শিকারিকে ছাপিয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে আশপাশের দর্শকদেরও।
সৌখিন মৎস্য শিকারিদের দেখতে চারপাশে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।শিকারিদের মধ্যে কেউ বড় মাছ পেয়ে খুব খুশি আবার কেউ আশানুপাত মাছ না পেয়ে হতাশ।তবে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া কম বেশি সবার বড়শিতে ধরা পড়ছে রুই,কাতলা,মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
বরশি ফেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা এবং মাছ ধরা এক অন্য রকম শখের বিষয়।টোপ,ছিপ আর বড়শী।মাছ শিকারের প্রাচীন অনুষঙ্গই নয়,কঠিন অধ্যবসায় আর অপরিসীম ধৈর্য পরীক্ষার বিকল্প নামও বটে।
পিঁপড়ার ডিম অথবা রুটির ছাতু দিয়ে বড়শি ছিপে মাছ ধরা,ক্ষেতের আইলে বাইড় পেতে মাছ ধরা ধানক্ষেত সেচে মাছ ধরা,বৃষ্টির দিনে বাড়ির আশপাশের ডোবা-খাল থেকে বড় বড় কৈ মাছগুলো উপরে ডাঙায় উঠে আসতো ডোবা-খালে কচুরিপানার বা শ্যাওলা ডাঙ্গায় তুলে ঝাকি দিয়ে পাওয়া যেত দেশীয়
শিং,মাগুর,কই,শোল,টাকি,গুতুম,বাইম,টেংড়া,পুঁটি,চান্দা,খইলস্যা,বৈছাসহ আরো কত রকমের নাম-না-জানা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।সেই মাছ ধরার কি যে আনন্দ ছিল!এসব এখন আর দেখা যায় না।
ছেলেবেলার কাঁদায় মাখামাখি,হৈহুল্লোর,কলার ভেলা বানিয়ে রাস্তার ধারের খালের মধ্যে সাঁতার কাটা,দাপাদাপি করা শাপলা-শালুক কুড়ানো পুকুরে পদ্মপাতার মাঝে চিৎ হয়ে মাথা তুলে ধরা,নলই খেলা ডুবোডুবি করে চোখ লাল করা,তুমুল বৃষ্টিতে ভেজা হাটু কাঁদা পেরিয়ে পথচলা।কাঁদায় ভরপুর তুমুল বৃষ্টিতে ফুটবল খেলা এসব এখন কালের পরিক্রমায় বিলুপ্তির পথে।বর্তমানের আধুনিকতা মোবাইল ইন্টারনেট প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে গতি স্বাচ্ছন্দ্য দিয়েছে,কিন্তু কেড়ে নিয়েছে অনেক ‘রূপকথা’র উপকরণ!
লেখক সাংবাদিক কলামিস্ট