ঢাকাFriday , 8 April 2022
  1. অগ্নিকান্ড
  2. অগ্নিসংযোগ
  3. অনুসন্ধান ইসলামী জীবন
  4. অনুসন্ধান ডেস্ক
  5. অন্যান্য অনুসন্ধান
  6. অপরাধ
  7. অর্থনীতি
  8. আইন আদালত
  9. আগুনে পুড়ে মৃত্যু
  10. আত্মহত্যা
  11. আন্তর্জাতিক
  12. আন্দোলন
  13. আবহাওয়া
  14. ইউনিয়ন নির্বাচন
  15. ইসলাম ও জীবন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যন্ত্রণার আরেক নাম অনলাইন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন

Link Copied!

বিষয়টি যন্ত্রণারই।অনলাইন জন্ম ও মৃত্যুসনদ গ্রহণ এখন যন্ত্রণারই আরেক নাম।অনলাইন জন্ম ও মৃত্যুসনদ গ্রহণ করতে যারাই সংশ্লিষ্ট কার্যালয়গুলোতে যান তারাই পড়ে যান ভোগান্তিতে।

পাসর্পোট,বিয়ে ও জমি রেজিস্ট্রেশন,শিশুদের করোনার টিকা এবং স্কুলে ভর্তিসহ ১৭টি সেবার ক্ষেত্রে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।কিন্তু ‘বাধ্যতামূলক’ ও জরুরি এই সনদ পেতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে।জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয়ের জনবল সংকট, ইন্টারনেটের ধীরগতি ও কেন্দ্রীয় সার্ভারে নানা জটিলতার কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

ইউপি কার্যালয় থেকে জন্ম ও মৃত্যুসনদ নিতেও ভোগান্তি মোটেই কম নয়।প্রশ্ন হচ্ছে,এই যন্ত্রণার অবসান হবে কিসে?অতিব গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অধিকারের এই দিকটি দেখার যেন কেউ নেই।এই কাজে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার প্রতিনিয়তই হন কিন্তু বলতে পারেন না।কার কাছে বলবেন?অধিকাংশ মানুষ জানেনও না যে,সরকারি অফিসের লোকদের হয়রানির বিরুদ্ধে নালিশ নিয়ে কার কাছে তাদের যাওয়া উচিত।

এই কারণে অধিকাংশ নাগরিকেরই ভাবনা এমন যে,মশা মারতে কামান দাগিয়ে দরকার কি!জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের সরকারি ফেসবুক পেইজ ঘুরে দেখা গেছে,সেখানে ভুক্তভূগী কিছু নাগরিক তাদের কাছ থেকে এসব কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক অর্থ আদায়সহ হয়রানি এবং সেবা না পাওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন।কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগগুলো আদৌ আমলে নিয়েছেন কি না,তা যেমন বোধগম্য নয়,তেমনি এসব অভিযোগের বিষয়ে বাস্তবিকপক্ষে তদন্ত সাপেক্ষে এ পর্যন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না,তা জানারও সুযোগ হয়নি।

সম্প্রতি দেশে ১২ থেকে ১৮ বছরের শিশুদের করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু হলে জন্মনিবন্ধনের সনদ উত্তোলনের হার বেড়ে যায়।কিন্তু এই সনদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অভিভাবকরা ঘাটে ঘাটে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।দিতে হচ্ছে বাড়তি টাকাও।আবার অনেকের জন্মসনদ সংশোধন করতে হচ্ছে।সেখানে ভোগান্তি আরও বেশি।জন্মনিবন্ধন উত্তোলন ও সংশোধনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দালালচক্র।

নাগরিকের রাষ্ট্রীয় যে কোনো জরুরি কাজে জন্ম ও মৃত্যুসনদের প্রয়োজনীয়তা এখন সর্বজনবিদিত।কিন্তু দেখা যায়,এসব সনদ পেতে মানুষের ভোগান্তি ও হয়রানি নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।জন্মনিবন্ধন করতে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ হরহামেশা শোনা যায়।টাকা না দিলে তাদের সেবা দেয়া হয় না।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের টাকা দেয়া ছাড়া সেবাপ্রাপ্তির কোন সুযোগ আসলে আদৌ এই ক্ষেত্রটিতে নেই বললেই চলে।

বলা বাহুল্য,আমাদের দেশের অধিকাংশ সাধারণ মানুষ অতটা শিক্ষিত এখনও হয়ে ওঠেননি এবং টেকনিক্যাল কাজেও তারা এতটা পারদর্শী নন যে,নিজের জন্মনিবন্ধন অনলাইন করার কাজটি নিজেই অনলাইনে বসে সম্পাদন করে নিবেন।ফলে তাদের এসব কাজে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের সহযোগিতা নিতে সেখানে যেতেই হয়।আর গেলেই তারা প্রতিনিয়ত মুখোমুখি হন নানাবিধ হয়রানির।

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়,গ্রামের সহজ–সরল ও নিরক্ষর মানুষ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গেলে সেবা তো দূরের কথা,কোনো তথ্য পেতেও ভোগান্তির শিকার হন।এটা যে কতটা যন্ত্রণাদায়ক,তা সেখানে না গেলে বোঝা যাবে না। একমাত্র ভুক্তভুগীদের পক্ষেই এটা অনুধাবন করা সম্ভব।বিশেষত এখন ডিজিটাল নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে দেয়ায় দুর্নীতি ও হয়রানি দুটিই মাত্রাতিরিক্ত পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিভিন্ন বোর্ডে পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের জন্য শিক্ষার্থী এবং তাদের পিতা মাতাদেরও জন্মনিবন্ধন করার প্রয়োজন হয়।ইদানিংকালে শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের অনলাইন জন্মনিবন্ধন দেখাতে হচ্ছে।এমনও দেখা যায়,অনেকের জন্মনিবন্ধনে বিভিন্ন ভুল তথ্য রয়েছে।বিশেষ করে যাদের জন্ম ২০০১ সালের পরে,তাদের বাবা–মায়ের জন্মনিবন্ধন করানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।তাই বিভিন্ন প্রয়োজনে জন্মনিবন্ধন অনলাইন করাতে গিয়ে গ্রাহকদের পোহাতে হয় হয়রানি ও দুর্নীতির ধকল।

তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাঁদের।যেখানে ৫০ বা ১০০ টাকার সরকারি ফি প্রদান করে একটি ভুল সংশোধন করা সম্ভব,সেখানে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা দিয়ে তা করাতে হয়।গ্রাহকও বাধ্য হন টাকা দিতে। কেননা,জন্মনিবন্ধনে ভুল থাকলে বিশেষ বিশেষ কাজ আটকে যায়।

এটা ঠিক যে,ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন পদ্ধতি হওয়ার বিষয়টি নি:সন্দেহে ইতিবাচক।এর ফলে নাগরিকের সুযোগ বেড়েছে বটে,তবে এর সাথে পাল্লা দিয়ে দুর্নীতিও বেড়েছে বহুগুণে। প্রাথমিকভাবে এতে ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর লাগে।এরপরে চূড়ান্ত সনদে প্রয়োজন হয় ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর।এ ক্ষেত্রে টাকা নেয়ার অভিযোগ সচরাচর না উঠলেও কার্যালয়ে সময়মতো ইউপি সদস্য এবং চেয়ারম্যান মহোদয়গণকে না পাওয়ার অভিযোগ অহরহ পাওয়া যায়।

এক্ষেত্রেও সাধারণ নাগরিকের অধিকারের বিষয়টি জনপ্রতিনিধিদের বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।জনগণ ভোট দিয়ে ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান বা জনপ্রতিনিধি বানিয়েছেন।কিন্তু কাজের সময় তাঁদের খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে।এমন পরিস্থিতিতে জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সময়োপযোগী পদক্ষেপ একান্তভাবেই প্রয়োজন।আমাদের মনে রাখতে হবে,সাধারণ নাগরিকের এসব সেবাপ্রাপ্তির অধিকার একান্তভাবেই রয়েছে এবং এগুলো তাদের মৌলিক নাগরিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে।

‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে’ বলে আমরা যারা তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে অভ্যস্ত,দেশের অতি সাধারণ জনগণকে যারা তেমন একটা গণনায় ধরার মনে করি না -অবহেলিত এবং অধিকার বঞ্চিত সেই জনগণের মৌলিক ক্ষুদ্র এই অধিকারটি নিয়ে আমাদের একটু হলেও ভাবা প্রয়োজন।

ভাবা প্রয়োজন রাষ্ট্রযন্ত্রের মান্যবর কর্তাব্যক্তিদেরও।জনসাধারণের এসব অধিকারপ্রাপ্তির পথকে কন্টকমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া এখন সময়ের অন্যতম দাবি।পাশাপাশি,যারা জনগণকে হয়রানি করে প্রতিনিয়ত নিজেদের পকেট ভারী করার মত ঘৃণ্য অপকর্মে লিপ্ত,সরকারি কার্যালয়ে জনগণের শ্রমে-ঘামে অর্জিত রাজস্বে প্রতিপালিত এমন দুষ্কৃতিপরায়ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়াও এখন সময়ের দাবি।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
error: Content is protected !!