
সড়ক নিরাপদ করতে আইন হয়েছে।ভেবেছিলাম সড়ক এবার হয়তো নিরাপদ হবে।সড়ক নিরাপদ হয়নি।
এদেশে কত শত আবদুস সামাদের মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন। সড়কে মূল্যবান প্রাণ যাচ্ছে।হাত যাচ্ছে,কারো পা যাচ্ছে,মাথা যাচ্ছে,জীবন যাচ্ছে।থামছে না সড়কে মৃত্যু মিছিল।আমরা বিশেষ দু’একজনের জন্য আহ্ উহ্ করি।
প্রতিদিন কত সামাদ,কত হৃদয় পঙ্গু হচ্ছে,জীবন দিচ্ছে তার খোঁজ কি রাখি?আমরা কেন মৃত্যুর মিছিল রোধ করছি না?কেবল আলোচিত ঘটনায় মন্ত্রী,এমপিরা ছুটে যায়,স্বজন কিংবা লাশের পাশে।আমরা মায়া কান্না করি লাভ কি তাতে
নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন,ধমর্ঘট,মিছিল,সমাবেশ কত কিছুই না হলো।ছাত্রদের আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশে নানান কান্ড ঘটে গেল ২০১৮ সালে।যার মধ্যে সাড়াজাগানো বিষয় নিরাপদ সড়কের জন্য ছাত্রদের আন্দোলন।জনমনে আজও প্রশ্ন,আদৌ কি এই নিরাপদ সড়ক আমরা পেয়েছি?থেমেছে কি সড়কে মৃত্যুর মিছিল?
একটি জাতীয় দৈনিকে হিসেবে,৬৮৮ দিনে ৫ হাজার ৯৭৬ জন সড়ক দুঘর্টনায় প্রাণ হারিয়েছেন।গড়ে দৈনিক ৮ জনের বেশি প্রাণ হারাচ্ছে আমাদের দেশে।আমি পরিসংখ্যান নিয়ে টানাটানি করবো না।কারণ পরিসংখ্যান ঘাটলে হতাশা আর কষ্ট ছাড়া কিছুই প্রাপ্তি নেই।আমি শুধু বলতে চাই,সড়কের প্রাণহানী কমিয়ে আনার কি কোনো উপায় নাই?নিরাপদ সড়কের জন্য আমাদের দেশে সংগঠনেরও অভাব নেই।
কিন্তু কেউ কাজের কাজ করছে বলে মনে হয় না।সবাই লোক দেখানো কাজে মেতে ওঠে।আর বাকি সময় কেউ যেন কিছু জানেই না।প্রতিদিন সড়কে ঝরে যাচ্ছে তাজা তাজা প্রাণ।কেউ মা,কেউ বাবা,কেউ হারাচ্ছেন সন্তান।কেউ কেউ পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে।শত শত পরিবার হয়ে যাচ্ছে অসহায়।
যে সড়কের জন্য স্বজনদের হৃদয় পুড়েছে,যে সড়কের জন্য হাজার হাজার পরিবার ধ্বংস হয়েছে।বতর্মান সরকার যদি এই বিষয়টির দিকে সুনজর না দেয় তাহলে সড়কে মৃত্যুর মিছিল কখনোই থামবে না।
আমরা এই সেক্টরের কাজ দেখি শুধু লোক দেখানো।আসলে এই সেক্টরে চলছে দুনীির্তর মহোৎসব।এ সেক্টরের প্রধান বাণিজ্য লাইসেন্স।যত বেশি টাকা,তত আগে লাইসেন্স।সে গাড়ি চালাতে জানুক আর না জানুক।টাকা ঢাললে নাকি লাইসেন্স ২ মিনিটের বিষয়।
এমন যদি হয়,তবে সড়কের মৃত্যু অস্বাভাবিক কিছু নয়।তাই প্রধানমন্ত্রীর উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সেক্টরের প্রতি নজর দিয়ে দেশ এবং দেশের মানুষকে রক্ষা করুন।সড়কে মৃত্যু প্রতিরোধ করার জন্য সরকারের বেতনভুক্ত অনেক কমর্কতা রয়েছে।যারা এই বিষয় নিয়ে কাজ করার কথা।অথচ তারা সরকার থেকে জনগণের সেবা করার জন্য পারিশ্রমিক নিয়ে জনগণকে বুড়ো আঙ্গুল দেখায়।
সড়কে রোজ মৃত্যু হচ্ছে।অথচ এই সেক্টরের কারও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।আইন থাকলেও কাযর্কর হয় না সেই আইন।কারণ আইনেও এখন চলছে অংকের হিসাব।তাই সুশাসন এবং ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠিত করলে সবদিকেই জনগণের উন্নয়ন হবে।আর জনগণের উন্নয়ন মানে দেশের উন্নয়ন।বিচারের আওতায় আনতে হবে সরকারি বেসরকারি সব কমর্কতাদের।
এবং আমরা বরাবরের মতো এখনও বলতে চাই,যেকোন মূল্যে সড়কে মৃত্যুর মিছিল শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে হবে।এজন্য সব পক্ষকে পর্যাপ্ত কাউন্সেলিং,প্রশিক্ষণসহ যা যা করা দরকার,তা করতে হবে।এ বিষয়টিকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে গুরুত্বের সাথে নিতে হবে।নয়তো এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে না।সড়কে থামবে না মৃত্যর মিছিল,সড়ক হবে না নিরাপদ।